গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
করোনাভাইরাসের মধ্যে ২৫ শতাংশ মেস ভাড়া মওকুফে সন্তুষ্ট না হয়ে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা গণহারে মেস ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘প্রতিবাদ করুন বাসা ছাড়ুন, বশেমুরবিপ্রবি’ নামে আন্দোলন গড়ে তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও বাড়ি ভাড়ার সমস্যায় গঠিত কমিটির সাথে গোপালগঞ্জের নবীনবাগ এলাকার মেস মালিকদের আলোচনা শেষে ঐ এলাকার মেস ভাড়া ২৫ শতাংশ মওকুফ করা হয়। কিন্তু এরকম সিদ্ধান্তে হতাশ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন নবীনবাগে বসবাসরত শিক্ষার্থীরা।
নবীনবাগে বসবাসরত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নাঈম তালুকদার বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের ৭৫ শতাংশ ভাড়া বহন করা অত্যন্ত কষ্টের হবে। ছুটি যদি আরো দীর্ঘায়িত করা হয় জানি না কিভাবে ভাড়া বহন করবো। তাই বাধ্য হয়ে মেস ছেড়ে দেয়া ছাড়া কোন উপায় দেখছি না।
বশেমুরবিপ্রবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রথীন্দ্রনাথ বাপ্পী বলেন, নবীনবাগে মেস ভাড়ার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তাতে আমরা হতাশ ও মর্মাহত হয়েছি। কারণ আমরা আশা করেছিলাম অন্তত ৫০ শতাংশ মওকুফের সিদ্ধান্ত হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। ফলে করোনার এই দুঃসময়ে অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষে ৭৫ শতাংশ ভাড়া দেয়া কষ্টকর হবে। তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের দাবি থাকবে যেসকল শিক্ষার্থী এই ৭৫ শতাংশ ভাড়া দিতে সক্ষম নয়, তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিবে।
এদিকে গোবরাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের এলাকার মেস ভাড়া ৪০ শতাংশ মওকুফ হওয়ায় তুলনামূলক সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন এসব এলাকায় ভাড়ায় থাকা শিক্ষার্থীরা। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ভাড়া থাকেন এমন বেশ কয়েকটি এলাকায় মেস ভাড়া মওকুফের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অনেকে।
বাড়ি ভাড়ার সমস্যায় গঠিত কমিটির সভাপতি ড. মো. হাসিবুর রহমান বলেন, বাড়ির মালিকদেরকে আমরা ভাড়া মওকুফের জন্য চাপ প্রয়োগ করতে পারি না। শুধুমাত্র অনুরোধ করতে পারি। আর আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যাতে অধিক পরিমাণ ভাড়া মওকুফ করা যায়। তিনি আরও বলেন, কমিটির সকলের সাথে আলোচনা করে যারা অধিক সমস্যায় রয়েছে তাদের বিশেষ সহযোগিতা প্রদান করার বিষয়ে আমরা একটি প্রস্তাব রাখার চেষ্টা করবো।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের কারণে গত মার্চ থেকে বিশ্বিবিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের টিউশনসহ সবকিছু বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী বাড়ি কিংবা মেসভাড়া নিয়ে সমস্যায় পড়েন। পরে বিষয়টি সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি কমিটি গঠন করে। বর্তমানে এ কমিটি কাজ করে যাচ্ছে।
Leave a Reply