গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
করোনায় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ভাঙ্গারী ব্যবসায় ধস নেমেছে। করোনা সংক্রমন শুরুর পর এ ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। মাহাজনরা বাড়ির পাশের খালে ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত নৌকা নোঙ্গর করে বসে রয়েছেন। এ ব্যবসার সাথে জড়িত ৫০ মহাজন ও ৩ হাজার ফেরিওয়ালা বেকার হয়ে পড়েছেন। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা নিদারুন কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। মাহাজনদের কাছ থেকে সাড়ে ৭ কোটি টাকা দাদন নিয়েছেন ফেরিওয়ালারা। দাদনের টাকা ফেরিওয়ালারা সংসারের পেছনে খরচ করেছেন। এদিকে ভাঙ্গারী মহাজনরা ফেরিওয়ালাদের দাদন দিয়ে পুঁজি সংকটে পড়েছেন। এখন ফের ব্যবসা শুরু করতে মাহাজনরা সরকারের কাছে স্বল্প সুদে ঋন চেয়েছেন।
কোটালীপাড়া উপজেলার কুরপালা গ্রামের মহাজন মোঃ রাসেল ব্যাপারী, তাড়াশী গ্রামের কালাম ও নাসির ব্যাপারী বলেন, আমরা ৫০ ভাঙ্গারী মহাজন বরিশাল, ভোলা,পিরোজপুর, নড়াইল, বাগেরহাট,বরগুনা, ঝালকাঠিসহ দক্ষিাণাঞ্চলে নৌকায় করে ভাঙ্গারী মাল ক্রয় করি। আমাদের সাথে রয়েছে ৩ হাজার ফেরিওয়ালা। এরা দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোর গ্রামের বাড়িতে বাড়িতে ঘুরে আমাদের দেয়া পন্য বদল করে ভাঙ্গারী লোহা লক্কর, প্লাষ্টিক সামগ্রী এনে আমাদের নৌকায় জমা দেন। এ কাজ করার জন্য আমরা ৩ হাজার ফেরিওয়ালার প্রত্যেককে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা দাদন দিয়েছি। এ টাকা তারা সংসারের পেছনে খরচ করেছে। এ ছাড়াও তাদের আমরা প্রতিদিনের পারিশ্রমিক দিতাম। আমরা ঢাকার ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীদের কাছে ভাঙ্গারী পন্য সরবরাহ করতাম। করোনর মধ্যে এ ব্যবসা বন্ধ হয়েছে। পুঁজি সংকটে আমরা ফের ব্যবসা শুরু করতে পারছিনা। সরকার স্বল্প সুদে ঋনের ব্যবস্থা করলে আমরা পুনরায় ব্যবসা শুরু করতে পারবো। এটা করতে পারলে এ ব্যবসার সাথে যুক্ত প্রায় ৪ হাজর পরিবার নতুন করে বাঁচতে পারবে।
ফেরিওয়ালা ফরিদ শেখ, মাসুম মোল্লা ও রইচ মোল্লা বলেন, এ ব্যবসায় মহাজনদের সহযোগিতা করার জন্য আমরা মহাজনদের কাছ থেকে ২ থেকে ৩ লাখ টাকা করে দাদন নিয়েছি। আমরা মহাজনের হয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ভাঙ্গারী সংগ্রহ করে ব্যাপারীদের কাছে এনে দেই। আমরা ব্যাপারীদের কাজ থেকে যে টাকা নিয়েছি তা আমরা সন্তানদের লেখাপড়া, জমিক্রয় ও সংসার চালাতে ব্যয় করেছি। আমাদের কাছে কোন নগদ টাকা নেই। এছাড়া প্রতিদিন কাজের জন্য আমরা মহাজনদের কাছ থেকে পারিশ্রমিকও পেতাম। করোনার মধ্যে ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে কষ্টে আছি। ব্যবসা শুরু না হলে আমাদের সামনে ঘোর দুর্দিনের মধ্যে পড়তে হবে।
এ বিষয়ে কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, আমরা চাই সবার অর্থনৈতিক কর্মকান্ড সচল থাকুক। সবাই স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করুক। এ ক্ষেত্রে আমার সহযোগিতার হাত সব সময় প্রসারিত থাকবে। এ ব্যাপারে আমি আমার উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলাপ করব। ফেরিওয়ালা ও মহজনদের এ বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবো। #
Leave a Reply