গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
গোপালগঞ্জে অত্যাচারের শিকার সীমা বেগম (২০) এক গৃহবধূ সুইসাইট নোট লিখে আত্মহত্যা করেছেন। সুইসাইট নোটে ওই গৃহবধূ তার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে মা,বাবা,ভাই বোনদের কাছে দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া তার মেয়েকে দেখেশুনে রাখার জন্য বাবারবাড়ির লোকদের প্রতি তিনি অনুরোধ করেছেন।
গত ২২ মে গোপালগঞ্জ শহরে মৌলভীপাড়ার মোঃ শেখ মুজিবুর রহমানের স্ত্রী সীমা বেগম নিজের ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই গৃহবধূর শরীরে লুকিয়ে থাকা সুইসাইট নোট উদ্ধার করে। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
ওই নোটে লেখা ছিলো বাবার বাড়িতে অনেক দুঃখ কষ্টে বড় হয়েছি। বিয়ের পর স্বামীর সংসারে এসে অত্যাচারের শিকার হচ্ছি। এখানে আমাকে কেউ ভালবাসেনা। এখনে অত্যাচারের মাত্রা সহ্যের বাইরে চলে গেছে। আমরা স্বামীর কিছু নেই। সে ফকির, তাই তার প্রতিবাদ করার ক্ষমতাও নেই। তাই এ অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে আতœহত্যা করছি।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চরমানিকদহ গ্রামের চুন্নু মিয়ার মেয়ে সীমাকে ২ বছর আগে শহরের মৌলভীপাড়ার বাসিন্দা মোঃ শেখ মুজিবুর রহমান বিয়ে করেন। এ দম্পত্তির ১৪ মাস বয়সের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, ওই গৃহবধূর ভাসুর শহরের ধর্ণাঢ্য ব্যবসায়ী উল্কা বাইক সহ বিভিন্ন কোম্পানীর ডিস্টিবিউটর রবিউল ইসলাম বিয়ের পর থেকেই তার ওপর মানসিক নির্যাতন করে আসছিলে। সীমার স্বামী গরীব। তার টাকা পয়সা নেই। তাই স্ত্রীর ওপর বড় ভাইয়ের মানসিক নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে পারেনি। সম্প্রতি রবিউলের এ নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ওই গৃহবধূ আতœহত্যা করেছে।
ওই গৃহবধূর পিতা চুন্নু মিয়া মুঠো ফোনে বলেন, আমার মেয়ের ওপর মানসিক অত্যাচার যে করেছে, তার নাম আপনাদের সাথে দেখা করে বলতে চাই। ফোনে বলা যাবেনা, বলেই ফোন কেটে দেন। তারপর থেকে তার মোবাইল বন্ধ রয়েছে।
গোপালগঞ্জে সদর থানার ওসি মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, ওই গৃহবধূর সুইসাইট নোট উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপরে একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভাসুরের মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে ওই গৃহবধূ আতœহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে।
অভিযুক্ত ভাসুর রবিউল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আমি মানসিকভাবে বিপর্যন্ত। বিষয়টি সীমার মা,বাবা, ভাই ও বোনদের সাথে বসে মীমাংসা করে ফেলা হয়েছে। এ ব্যাপারে আপনারা গণমাধ্যমে কোন নিউজ করবোন না। তিনি পরে গণমাধ্যম কর্মীদের তার সাথে দেখা করার পরামর্শ দেন।
Leave a Reply