গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
করোনায় ৩ মাস বন্ধ থাকার পর কারখানায় উৎপাদন শুরু করেছি। কিন্তু উৎপাদিত পন্য সরবরাহ করতে পারছিনা। বিসিকের রাস্তার বেহাল দশা। এখানে কেউ আসতে চায়না। ড্রইভাররা গাড়ি ঢুকাতে চায়না। ঢুকালেও ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে প্রতিদিন। খানা-খন্দে ভরা এ রাস্তায় ছোট যানবাহন চলাচল করতে পারেনা। পানি ও কাদায় একাকার হয়ে বিসিকের রাস্তা চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। গত ৮ মাস ধরে বিসিক শিল্পনগরীর সমস্ত রাস্তা খুঁড়ে ফেলে রাখা হয়েছে । বর্ষা মৌসুম শুরুর পর বিসিকের রাস্তায় ধান চাষের অবস্থা সৃস্টি হয়েছে। আমরা উৎপাদিত পন্য বিক্রি করতে না পেরে কারখানা চালাতে হিমশিম খাচ্ছি। প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে। এরপর আবার বিসিক শিল্প প্লটের প্রতি স্কয়ার ফুটের সার্ভিসচার্জ দেড় টাকার স্থলে তিন টাকা করেছে। বিসিকের রাস্তাঘাট সংস্কার ও বর্ধিত সার্ভিস চার্জ কমিয়ে সরকার আমাদের এ অবস্থা থেকে রক্ষা করবেন এনটাই প্রত্যাশা করছি। কথাগুলো বলেন, গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরীর শিল্প উদ্যোক্তা মোঃ মিজানুর রহমান।
শুধু মিজানুর রহমানই নন এ শিল্পনগীর ৬৪ টি শিল্পকারখানা মালিকের এটি প্রণের দাবিতে পরিনত হয়েছে।
গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানিছে, শহর সংলগ্ন এ শিল্পনগরী সাড়ে ১০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে ৬৪ টি শিল্পপ্লট রয়েছে। এ নগরীর ১.৬৬ কিঃমিঃ সড়ক ও ২.৩ কিঃমিঃ ড্রেনের উন্নয়ন কাজ চলছে। মোর্শেদ এন্টার প্রাইজ, আকন এন্টারপ্রাইজ, ও সেভেন স্টার নামে ৩টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা চুক্তিতে সড়ক ও ড্রেনের কাজ করছে। তারা ৮ মাস আগে এ কাজ শুরু করে। কিন্তু কারোনার কারণে তারা কাজ বন্ধ করে দেয়। গত ২০ আগস্ট বৃহস্পতিবার থেকে আবার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করেছে।
গোপালগঞ্জ বিসিক শিল্প মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মোশাররফ হোসেন বলেন, বিসিকের সড়কে বেহাল দশায় ব্যবসা-বানিজ্যে ধ্বস নেমেছে। এরমধ্যে আবার শিল্পপ্লটের সার্ভিসচার্জ দ্বিগুন করা হয়েছে। এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা। আমি পূর্বের সার্ভিস চার্জ বহাল রেখে শিল্প মালিকদের রক্ষার দাবি জানাচ্ছি।
বিসিক শিল্পমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আকবর আলী মোল্লা বলেন, রাস্তাঘাট খুঁড়ে রেখে আমাদের শিল্প ও বানিজ্যের ব্যাপক ক্ষতি করা হয়েছে। আমাদের কেনা-বেচা একেবারে শূণ্যের কোঠায় নেমে এসেছে। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে। দ্রুত আমাদের সমস্যা সমাধনের দাবি করছি।
ঠিকাদারের প্রতিনিধি এস.এম সাঈগীর কবির বাবু বলেন, ড্রেনের সাথে সমন্বয় করে রাস্তা করতে হয়। আগে ড্রেন হয়েছে। এ কারণে রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরুতে বিলম্ব হয়েছে। এছাড়া বাস্তবে কাজ করতে এসে আমাদের আনেক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তারপর করোনা শুরু হলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে আমদেরও ক্ষতি হয়েছে। আমরা বৃহস্পতিবার থেকে পুনরায় কাজ শুরু করেছি। ২ মাসের মধ্যেই রাস্তা ও ড্রেনের কাজ শেষ করবো।
গোপালগঞ্জ বিসিকের শিল্পনগরী কর্মকর্তা মাসুদ রানা বলেন, বিসিকের রাস্তার বেহাল দশার কারণে শিল্প মালিকদের ব্যবসা-বানিজ্যে অনেক আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। দীর্ঘ দিন বিসিকের রাস্তা ও ড্রেনের কাজ ফেলে রাখায় ঠিকাদারদের শোকজ করা হয়। অবশেষে তারা কাজ শুরু করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা মান সম্পন্ন কাজ বুঝে নেব। শিল্প মালিকরা বর্ধিত সার্ভিসচার্জ কমানোর দাবি করেছেন। এ ব্যাপারে তারা আবেদন করলে আমি বিসিকের উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবো।
Leave a Reply