গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি :
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পেনশনের টাকা তুলতে সাড়ে ৪ শ’ পেনেশনভোগীর ভোগান্তির শেষ নেই হিসাব রক্ষণ অফিসে। এমন অভিযোগ করেছেন পেনশনভোগীরা।
উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নিয়মিত অফিস না করায় এমন ভোগাান্তি হচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন। পেনশনের টাকা তুলতে তাদের অফিসের সামনে দিনের পর দিন ধর্না দিয়ে বসে থাকতে হচ্ছে। পেনশন ভোগীদের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে অনলাইনে প্রদানের ডাটাএন্ট্রির কাজ ৪ মাসেও শেষ হয়নি। তাই তাদের ভোগান্তি থেকেই যাচ্ছে। পেনশনভোগীরা দ্রæত এ সমস্যার সমাধান চেয়েছেন।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিস সূত্র জানিয়েছে, সরকারি বিভিন্ন দপ্তর থেকে অবসর গ্রহন করে এখান সাড়ে ৪ শ’ প্রবীণ অবসরভাতা প্রহন করছেন।
টুঙ্গিপাড়ার জি.টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সেকেন্দার আলী বলেন, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশনের টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে তোলার জন্য অনলাইনে ডাটা এন্ট্রি করার নির্দেশ আসে। তখন অবসরপ্রাপ্তদের ডাটা এন্ট্রি করার জন্য হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান দুইমাস সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু ৩/৪ মাস পার হলেও তিনি ডাটা এন্ট্রির কাজ সম্পন্ন করতে পারেননি। কারন তিনি মাসে দু’দিনও অফিস করেন না। বেশিরভাগ সময় ঢাকায় বসবাসরত পরিবারের সাথে থাকেন। কর্মকর্তা না থাকায় অবসরপ্রাপ্তদের পেনশনের টাকা তুলতে পরতে হয় ব্যাপক ভোগান্তিতে। ওই কর্মকর্তা উৎকোচের আশায় রয়েছেন। কিন্তু আমরা উৎকোচ দেইনি তাই ডাটাএন্ট্রির কাজ হচ্ছে না।
টুঙ্গিপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ফরিদ আহম্মেদ বলেন, আমরা যখনই পেনশনের টাকা তুলতে আসি সেদিন ওই কর্মকর্তা থাকেনা। এভাবে কয়েকদিন হিসাব রক্ষণ অফিসে আসলেও তার দেখা পাওয়া যায় না। এতে এ বৃদ্ধ বয়সে ভোগান্তির শেষ থাকেনা।
কাষ্টমস থেকে অবসরপ্রাপ্ত টুঙ্গিপাড়ার এমদাদুল হক জানান, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ঠিকমত অফিস করেনা। আর কখনো আসলেও নানান অজুহাত দেখায়। তিনি ইচ্ছামতো অফিস পরিচালনা করেন। দেশের সব জায়গায় অবসরপ্রাপ্তদের ডাটাএন্ট্রির কাজ হয়ে গেছে। কিন্তু এখানে হচ্ছে না। ওই কর্মকর্তা টাকা খাওয়ার জন্য আমাদের হয়রানি করছে। এছাড়া পেনশনের টাকা তুলতে আসা ভাতাভোগীর অনেকেই একই অভিযোগ করেন। অভিযোগকারীদের বক্তব্য ভিডিও আকারে এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে ।
নাম প্রকাশে না করার শর্তে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা নিয়মিত অফিসে না আসায় বেতন-ভাতা তুলতে পারেননি।
এবিষয়ে উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান নিয়মিত অফিস করার দাবি করে বলেন, নিয়মিত অফিস না করলে উপজেলা চলে কিভাবে। তবে পরিবার ঢাকা থাকে। বৃহস্পতিবার একটু আগে চলে যাই। রোববার ঢাকা থেকে অফিসে আসতে একটু দেরি হয়। ভাতাভোগীদের ডাটাএন্ট্রির কাজ সার্ভারে সমস্যার কারণে করা হয়নি। উৎকোচের জন্য তিনি এটি বন্ধ রাখেননি বলে জানান।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাকিব হাসান তরফদার মুঠোফোনে জানিয়েছেন, মৌখিকভাবে আগেও হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে সতর্ক করেছি। তাকে নিয়মিত অফিস করার জন্য বলা হয়েছে। ভাতাভোগীদের দুর্ভোগের কথা শুনেছি। দ্রুত এটি সুরাহা করা হবে।
Leave a Reply