আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল :
বরিশালে মৃত চিকিৎসকের সীল ও স্বাক্ষর দিয়ে পরীক্ষার রিপোর্ট প্রদানের অভিযোগে র্যাবের অভিযানে প্রতারক দুই মালিক, ভূয়া চিকিৎসক আটক, ডায়াগনিস্টিক সিলগালা।
বরিশাল র্যাব-৮ সূত্রে জানা গেছে, গত তিন মাস যাবত বরিশাল নগরীর জর্ডন রোডে দ্য সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেস ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে কোনো প্যাথলজিস্ট না থাকা সত্বেও প্যাথলজিস্ট ছাড়াই রোগ নির্ণয় করে ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করে আসছিল প্রতিষ্ঠানটি।
দ্য সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেস নামে ওই ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে প্যাথলজিস্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ফিজিওলজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক চিকিৎসক গাজী আমানুল্লাহ খান। তিন মাস আগে তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গত ১৯ জুলাই চিকিৎসক গাজী আমানুল্লাহ খান মারা যান।
সুত্রমতে, ওই ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে রোগী দেখতেন নূর-এ-সরোয়ার সৈকত নামে এমবিবিএস পাশকরা চিকিৎসক। রোগীদের দেয়া ব্যবস্থাপত্রে নূর-এ-সরোয়ার সৈকত নিজেকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে কর্মরত মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোলজি, বাত ব্যথা, হার্ট, ষ্ট্রোক, নাক, কান, গলা, বক্ষব্যাধি ও চর্ম ও যৌন রোগে অভিজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিলেন। আসলে নূর-এ-সরোয়ার সৈকত শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক কিংবা ছাত্র কোনোটিই নং। তিনি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাশ করেন।
বুধবার রাতে র্যাবের সহায়তায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের প্রতিনিধি ডা. মুন্সী মুবিনুল হক দ্য সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেস সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে বেড়িয়ে আসে রোগীদের সাথে তাদের প্রতারনার অভিনব কৌশল।
প্রতারণার অভিযোগে চিকিৎসক নূর-এ-সরোয়ার সৈকত এবং দ্য সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেস ডায়াগনোস্টিক সেন্টারের দুই স্বত্বাধিকারী জসিম উদ্দিন মিলন ও একে চৌধুরীকে আটক করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াউর রহমান জানান, অভিযানের সময় গাজী আমানুল্লাহ খানের মৃত্যুর বিষয়টি গোপনের চেস্টা করেন প্রতিষ্ঠানের মালিক জসিম উদ্দিন মিলন ও এ কে চৌধুরী । তবে বিভিন্ন মাধ্যমে প্যাথলজিস্ট চিকিৎসকের মত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে জেরার মুখে মালিক পক্ষ মিথ্যা বলার জন্য ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে ক্ষমা প্রার্থণা করেন।
এসময় ভ্রাম্যমান আদালত দ্য সেন্ট্রাল মেডিকেল সার্ভিসেসের মালিক জসিম উদ্দিন মিলন ও একে চৌধুরীকে ছয় মাস করে কারাদন্ড প্রদান করেন। একই আদালত ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০-এর ২৯ ধারায় ভুয়া পদবি ব্যবহার করায় চিকিৎসক নূর-এ-সরোয়ার সৈকতকে ছয় মাসের কারাদন্ড প্রদান করে ডায়াগনিস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দেন।
Leave a Reply